বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
(কাফিরদের বিরুদ্ধে) যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারন তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আর নিশ্চয় আল্লাহ্ তাদেরকে সাহায্য করতে সম্যক সক্ষম। [কুরআন 22:39]
“যারা মুমিন তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, আর যারা কফের তারা তাগূতের পথে যুদ্ধ করে। কাজেই তোমরা শয়তানের বন্ধুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর; শয়তানের কৌশল অবশ্যই দুর্বল।” [কুরআন 4:76]
কিছু আমেরিকান লেখক ‘আমরা কিসের ভিত্তিতে যুদ্ধ করছি?’ শিরোনামে আর্টিকেল ছেপেছে। এগুলোর কিছু প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে কিছু সত্য আর ইসলামি আইনের উপর ভিত্তি করে। অন্যান্যগুলো এমন হয়নি। আল্লাহর পুরষ্কারের আশা করে, তাঁর কাছ থেকে সাফল্য এবং সমর্থন কামনা করে এসবের ব্যাখ্যা এবং সতর্কীকরণ হিসাবে আমরা এখানে সত্যের রূপরেখা ব্যাখ্যা করতে চাচ্ছি।
আল্লাহ্র সাহায্য কামনা করে আমেরিকানদের প্রতি আমাদের এই জবাব দুটো প্রশ্নের ভিত্তিতে দিচ্ছিঃ
(প্রশ্ন 1) আমরা কেন তোমাদের সাথে যুদ্ধ ও বিরোধিতা করছি?
(প্রশ্ন 2) আমরা তোমাদের কিসের প্রতি ডাকছি এবং তোমাদের কাছ থেকে আমরা কী চাই?
প্রথম প্রশ্নঃ আমরা কেন তোমাদের সাথে যুদ্ধ ও বিরোধিতা করছি?
উত্তর খুব সহজ:
১. কারণ তোমরাই আমাদের উপর (প্রথমে) আক্রমণ করেছো আর এখনো তা চালিয়েই যাচ্ছো।
(ক) তোমরাই আমাদের ফিলিস্তিনে আক্রমণ করেছো।
(i) ৮০ বছরেরও বেশী সময় যাবত ফিলিস্তিন সামরিক দখলে নিমজ্জিত। তোমাদেরই সাহায্য আর সমর্থনে ব্রিটিশরা ফিলিস্তিনকে ইহুদিদের হাতে তুলে দিয়েছে। তারা ৫০ বছরেরও বেশী সময় ধরে তা দখল করে রেখেছে। নিপীড়ন, অত্যাচার, অপরাধ, হত্যা, বহিষ্কার, ধ্বংস ও ধ্বংসযজ্ঞে উপচে পড়ছে বছরগুলো। ইসরায়েলের সৃষ্টি আর ধারাবাহিক অস্তিত্বই সবচাইতে বড় অপরাধের একটি। আর তোমরাই এই অপরাধীদের নেতা। অবশ্য ইসরায়েলের প্রতি আমেরিকান সমর্থনের মাত্রা ব্যাখ্যা এবং প্রমাণ করার তো প্রয়োজনই নেই। ইসরায়েলের সৃষ্টিই খোদ একটি অপরাধ যা অবশ্যই মুছে ফেলতে হবে। এই অপরাধে যাদের হাত দূষিত সেই প্রত্যেক ব্যক্তিকে এর মূল্য দিতেই হবে। আর সেই মূল্য হবে অনেক ভারী।
(ii) “ফিলিস্তিনের উপর ইহুদিদের ঐতিহাসিক অধিকার আছে যেভাবে তাওরাতে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে”—তোমরা যে এখনো এই বানোয়াট মিথ্যার পুনরাবৃত্তি করতে ক্লান্ত হয়ে যাওনি তা দেখে আমাদের হাসি আর কান্না দুটোই একত্রে পায়। এই তথাকথিত তথ্যের বিরোধীতা করলে তার বিরুদ্ধে anti-semitism-এর অভিযোগ চলে আসে। এটা তো ইতিহাসের সবচেয়ে ভ্রান্ত আর ব্যাপকভাবে প্রচারিত বানোয়াট কথা। বরং ফিলিস্তিনের জনগনই হলো খাঁটি আরব আর আদিম সেমাইট (original Semites)। মুসলিমরাই মূলত মুসা (আঃ) ও অবিকৃত তাওরাতের উত্তরাধিকারী। ইবরাহিম, মুসা, ঈসা ও মুহাম্মদ (আলাইহিমুস সালাম) সহ সমস্ত নবীদের ওপর মুসলিমরাই ঈমান এনেছে। যদি তাওরাতে মূসার অনুসারীদের ফিলিস্তিনের অধিকারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েই থাকে তবে এর সবচেয়ে বড় যোগ্যতা মুসলিমদেরই।
মুসলিমরা ফিলিস্তিন জয় করে যখন রোমানদের তাড়িয়ে দিয়েছিল তখন ফিলিস্তিন আর জেরুযালেম ইসলামে ফিরে এসেছিল, যা সমস্ত নবী রাসুলদেরই (আঃ) ধর্ম। অতএব, ফিলিস্তিনের প্রতি ঐতিহাসিক অধিকারের যে ডাক তা ইসলামিক উম্মতের বিরুদ্ধে আসতেই পারে না যারা সমস্ত নবীদের (আঃ) উপর ঈমান আনে আর তাদের মধ্যে পার্থক্য করে না।
(iii) ফিলিস্তিনিদের থেকে যে রক্ত ঝরছে তার সমান প্রতিশোধ নিতেই হবে। তোমরা জেনে রাখো, ফিলিস্তিনিরা একাই কাঁদছে না; তাদের নারীগন একাই বিধবা হচ্ছে না, তাদের সন্তানগন একাই এতিম হচ্ছে না।
(খ) তোমরাই আমাদের সোমালিয়াতে আক্রমণ করেছিলে। তোমরাই চেচনিয়াতে আমাদের উপর রাশিয়ার নৃশংসতা সমর্থন করেছিলে। কাশ্মীরে আমাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় নিপীড়ন এবং লেবাননে আমাদের বিরুদ্ধে ইহুদি আগ্রাসনকে তোমরাই সমর্থন দিয়েছিলে।
(গ) তোমাদেরই তত্ত্বাবধান, সম্মতি ও আদেশের অধীনে আমাদের দেশের সরকারগুলো তোমাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করে; দৈনিক আমাদের ওপর আক্রমণ করে।
(i) এই সরকারগুলি আমাদের জনগণকে ইসলামী শরীয়া প্রতিষ্ঠা করতে বাধা দেয়, তা করার জন্য সহিংসতা এবং মিথ্যা (তথ্য) ব্যবহার করে।
(ii) এই সরকারগুলি আমাদের অপমান করে। ভয়ভীতি আর দমন-নিপীড়ন করে কারাগারে বন্দী করে রাখে।
(iii) এই সরকারগুলি আমাদের উম্মাহর সম্পদ চুরি করে নগণ্য মূল্যে তোমাদের কাছে বিক্রি করে দেয়।
(iv) এই সরকারগুলি ইহুদিদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। নিজেদের জনগণের ছিন্নভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর ইহুদি রাষ্ট্রের অস্তিত্ব স্বীকার করে বেশিরভাগ ফিলিস্তিন তাদের হাতে তুলে দিয়েছে।
(v) (অতএব) এসব সরকারগুলোর অপসারণ আমাদের উপর ফরজ; উম্মাহকে মুক্ত করা, শরীয়াহকে সর্বোচ্চ আইনে পরিণত করা ও ফিলিস্তিনকে পুনরুদ্ধার করার জন্য একটি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। এসব সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই থেকে আলাদা কিছু নয়।
(ঘ) তোমরা আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং সামরিক হুমকি মাধ্যমে আমাদের সম্পদ আর তেল নগণ্য মূল্যে চুরি করছো। এটা পৃথিবীর ইতিহাসে মানবজাতির দ্বারা প্রত্যক্ষ করা সবচেয়ে বড় চুরি।
(ঙ) তোমাদের বাহিনী আমাদের দেশ দখল করে আছে। তোমরা তাদের সর্বত্র আপনার সামরিক ঘাঁটি ছড়িয়ে দিয়েছো, আমাদের ভূমি কলুষিত করছো, আমাদের পবিত্র স্থান অবরোধ করছো। এ সবই করছো ইহুদিদের নিরাপত্তা রক্ষা আর আমাদের ধন-সম্পদ লুট করার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে।
(চ) তোমরাই ইরাকের মুসলমানদের ক্ষুধার্ত করেছ। প্রতিদিন শিশুরা মারা যাচ্ছে সেখানে। আশ্চর্যের বিষয় যে তোমাদেরই নিষেধাজ্ঞার ফলে পনের লক্ষেরও বেশি ইরাকি শিশু মারা গেছে। তোমরা কোন পাত্তাই দাওনি। অথচ যখন তোমাদের ৩০০০ মানুষ মারা গেলো, পুরো বিশ্ব এমনভাবে উঠে দাঁড়ালো যে এখনো বসেনি।
(ছ) জেরুজালেম যে তাদের চিরন্তন রাজধানী; তোমরা ইহুদিদের এহেন (কু)ধারণাকে সমর্থন করেছো। সেখানে তোমাদের দুতাবাস স্থানান্তর করতে রাজি হয়ে গিয়েছো। তোমাদেরই সাহায্য আর সুরক্ষায় ইসরায়েলিরা এখন আল-আকসা মসজিদ ধ্বংস করার পরিকল্পনা আঁটছে। তোমাদেরই অস্ত্রের সুরক্ষায় শ্যারন আল-আকসা মসজিদে ঢুকে দখল আর ধ্বংস করার প্রস্তুতি হিসেবে সেটাকে অপবিত্র করেছে।
(২) এইসব বিপর্যয় ও বিপর্যয় আমাদের প্রতি তোমাদের অত্যাচার ও আগ্রাসনের কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। আমাদের ধর্ম আর যুক্তি থেকেই আদেশ আসছে যে, নিপীড়িতদের (নিপীড়নকারীর উপর আগ্রাসন) ফিরিয়ে দেওয়ার অধিকার রয়েছে। আমাদের কাছ থেকে জিহাদ, প্রতিরোধ ও প্রতিশোধ ছাড়া আর কিছুর অপেক্ষা করো না। অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে আমেরিকা আমাদের আক্রমণ করার পর আমরা তাকে নিরাপত্তা ও শান্তিতে বসবাস করার জন্য ছেড়ে দেব এই আশা করা কি কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত?!
(৩) এরপরেও তোমরা তর্ক করতে পারো যে, উপরে উল্লেখিত সমস্ত কারণ সত্ত্বেও যে অপরাধ তারা করেনি এবং যে পাপে তারা অংশ নেয়নি তার জন্য বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আগ্রাসন কোনোভাবেই ন্যায্য হতে পারে না।
(ক) এই যুক্তিটি তোমাদের নিজেদের দাবী যে “আমেরিকাই হলো স্বাধীনতা আর স্বাধীনতার নেতাদের দেশ” সেটারই বিরোধীতা করে। কারণ দেশের সবাই স্বাধীন মানে আমেরিকার জনগনই স্বাধীন ইচ্ছায় তাদের এমন সরকার নিযুক্ত করেছে। তার মানে আমেরিকার (ফরেইন) পলিসির প্রতি তাদের সন্তুষ্টি থেকেই তারা এমন সরকার ঠিক করেছে। একইভাবে আমেরিকার জনগনই ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি নিপীড়ন, তাদের ভূমি দখল ও বেদখল এবং তাদের ক্রমাগত হত্যা, নির্যাতন, শাস্তি ও বহিষ্কারের জন্য তাদের সমর্থন দিয়েছে। আমেরিকান জনগণের হাতে তাদের সরকারের নীতি প্রত্যাখ্যান, এমনকি পরিবর্তন করবার চয়েস ও ক্ষমতা আছে।
(খ) আমাদেরকে আফগানিস্তানে বোমা বর্ষণকারী বিমান, আমাদের ঘর ধ্বংসকারী ট্যাংক, আরব উপসাগরে আমাদের ভূমি দখলকারী সেনা, ইরাক অবরোধ নিশ্চিতকারী নৌবহর—এসবগুলোর ফান্ডিং আমেরিকার জনগনের ট্যাক্স থেকেই আসে। এই ট্যাক্সের ডলার ইসরায়েলকেই দেয়া হয় যেন তারা বিরতিহীন আক্রমণ করে আমাদের ভূমিতে অনুপ্রবেশ করতে পারে। সুতরাং আমেরিকান জনগণই আমাদের বিরুদ্ধে হামলার অর্থায়ন করছে এবং তারাই তাদের নির্বাচিত প্রার্থীদের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছামত এই অর্থ ব্যয়ের তদারকি করে।
(গ) আমেরিকান সেনাবাহিনী আমেরিকান জনগণেরই অংশ। এই একই লোকেরা নির্লজ্জভাবে ইহুদিদের আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সহায়তা করছে।
(ঘ) আমেরিকান জনগণই তাদের পুরুষ এবং নারী উভয়কেই আমেরিকান বাহিনীতে নিয়োগ করে, যারা আমাদের আক্রমণ করে।
(ঙ) এই কারণেই আমেরিকান জনগণ আমাদের বিরুদ্ধে আমেরিকান এবং ইহুদিদের দ্বারা সংঘটিত সমস্ত অপরাধ থেকে নির্দোষ হতে পারে না।
(চ) সর্বশক্তিমান আল্লাহ প্রতিশোধ নেওয়ার অনুমতি দিয়ে আইন করেছেন। সুতরাং, যদি আমাদের উপর আক্রমণ করা হয়, তবে আমাদের পাল্টা আক্রমণ করারও অধিকার রয়েছে। যে আমাদের গ্রাম ও শহর ধ্বংস করবে, আমাদেরও অধিকার আছে তাদের গ্রাম ও শহর ধ্বংস করার। যারা আমাদের সম্পদ চুরি করেছে, তাদের অর্থনীতি ধ্বংস করারও অধিকার আমাদের আছে। আর যে আমাদের বেসামরিক মানুষ হত্যা করেছে, তাদের (বেসামরিক মানুষ) হত্যা করারও অধিকার আমাদের আছে।
আমেরিকান সরকার ও প্রেস এখনও এই প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করে, যে কেন তারা নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে আমাদের আক্রমণ করেছিল?
বুশের চোখে শ্যারন যদি শান্তির মানুষ হন, তাহলে আমরাও শান্তির মানুষ! আমেরিকা নীতি ও শিষ্টাচারের ভাষা বোঝে না। তাই আমরা এমন ভাষা ব্যবহার করে সম্বোধন করছি যেন সে বুঝতে পারে।
দ্বিতীয় প্রশ্নঃ আমরা তোমাদের কিসের প্রতি ডাকছি এবং তোমাদের কাছ থেকে আমরা কী চাই?
(১) সর্বপ্রথম আমরা তোমাদের ডাকছি ইসলামের প্রতি।
(ক) এই ধর্ম হলো স্রষ্টার একত্ববাদের ধর্ম, তাঁর সাথে অংশীদার স্থাপণ করা হতে মুক্ত একটি ধর্ম, আল্লাহ্র সাথে অংশীদারিত্ব প্রত্যাখ্যানের ধর্ম। ইসলাম ধর্ম হলো আল্লাহ্র প্রতি পরিপূর্ণ ভালোবাসার, তাঁর আইনের প্রতি পরিপূর্ণ বশ্যতা স্বীকার করার ধর্ম। তাঁর নবীর (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে প্রেরিত ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক সকল প্রকার মত, পথ, আদেশ, উপদেশ, তত্ত্ব ও ধর্ম বর্জনের ধর্ম হলো ইসলাম। ইসলামই হলো সমস্ত নবীদের ধর্ম। ইসলাম তাঁদের মধ্যে কোন পার্থক্য করে না। তাঁদের সকলের উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
এই ধর্মের দিকেই তোমাদের ডাকছি আমরা। পূর্ববর্তী সমস্ত ধর্মের সীলমোহর হচ্ছে ইসলাম। এটি হলো ঈশ্বরের একীকরণ, আন্তরিকতা, সর্বোত্তম আচরণ, ন্যায়পরায়ণতা, করুণা, সম্মান, পবিত্রতা এবং তাকওয়ার ধর্ম। অন্যের প্রতি দয়া দেখানো, তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা, তাদের অধিকার প্রদান করা এবং নির্যাতিত ও নিপীড়িতদের রক্ষা করার ধর্ম। হাত, জিহ্বা ও অন্তর দিয়ে ভালো কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করার ধর্ম ইসলাম। এটা আল্লাহর পথে জিহাদের ধর্ম, যাতে তাঁর কালাম ও দ্বীন সর্বোচ্চ রাজত্ব ধারণ করে। আর ইসলাম হলো আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের শর্তে ঐক্য ও সন্ধির ধর্ম, যাতে রয়েছে জাতি, বর্ন, লিঙ্গ বা ভাষা নির্বিশেষে সকলের মাঝে সাম্য ও সমতা।
(খ) এটি সেই ধর্ম যার গ্রন্থ “কুরআন”— অন্যান্য ঐশী গ্রন্থ ও বাণী পরিবর্তনের পরেও—সর্বকালে সংরক্ষিত এবং অপরিবর্তিত থাকবে। কেয়ামত পর্যন্ত কুরআন অলৌকিক থাকবে। আল্লাহ যে কাউকে কুরআনের মত একটি কিতাব বা এর মত দশটি আয়াত নিয়ে আসার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন।
(২) দ্বিতীয় যে বিষয়ের প্রতি তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি তা হল, তোমাদের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা অত্যাচার, অঞ্চার, মিথ্যা, অনৈতিকতা ও অশ্লীলতা বন্ধ করা।
(ক) আমরা তোমাদের উত্তম আচার-আচরণ, নীতি, সম্মান এবং বিশুদ্ধ মানুষ হতে ডাকি। আমরা তোমাদের আহ্বান করছি ব্যভিচার, সমকামিতা, নেশাজাতীয় দ্রব্য, জুয়া খেলা এবং সুদের ব্যবসার মতো অনৈতিক কাজগুলো প্রত্যাখ্যান করতে।
তোমাদের এসমস্ত জিনিসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এজন্য যেন তোমরা ইতিমধ্যে যেসবে মধ্যে আটকে আছো তা হতে মুক্ত হতে পারো। যেন তোমরা মুক্ত হতে পারো—আমরা এক মহান জাতি—এমন প্রতারণাপূর্ণ মিথ্যে হতে যা তোমাদের নেতারা তোমাদের ঘৃণ্য অবস্থা লুকিয়ে রাখতে ছড়িয়ে থাকে।
(খ) অতি দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে তোমরা হলে মানবজাতির প্রত্যক্ষ করা সবচাইতে নিকৃষ্টতম সভ্যতা।
(i) তোমরা সেই জাতি যারা আল্লাহ্র আইন দ্বারা সংবিধান পরিচালনা না করে নিজেদের ইচ্ছেমতো নিজেদের আইন উদ্ভাবন করাকে বেছে নিয়েছে। তোমরা আল্লাহ্র আইন থেকে দেশীয় সংবিধানকে আলাদা করে নিয়েছো। এর মাধ্যমে তোমরা তোমাদের স্বভাবজাত প্রকৃতি তথা ফিতরাতের বিরোধীতা করছো, যা তোমাদের স্রষ্টা ও ঈশ্বরের সম্পুর্ন কর্তৃত্ব সত্যায়ন করে।
তোমরা সেই বিব্রতকর প্রশ্ন থেকে পালিয়ে বেড়াওঃ যেই সর্বশক্তিমান আল্লাহ মানুষকে সমস্ত সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন, বাকি সমস্ত সৃষ্টি ও প্রাণীর ওপর যাদের সক্ষমতা দিয়েছেন, যাদের জীবনের সর্বপ্রকার সুযোগ-সুবিধার উপকরণ তিনি দিয়েছেন, সেই আল্লাহ মানুষের সবচাইতে মূল্যবান ও প্রয়োজনীয় জিনিস—তাঁদের জীবন পরিচালনার বিধানের জ্ঞান—দিতে কার্পণ্য করবেন?
(ii) তোমরাই সেই জাতি যারা সমস্ত ধর্মে নিষিদ্ধ সুদকে অনুমোদন দিয়েছে। তোমরা তোমাদের সম্পূর্ণ অর্থনীতি আর বিনিয়োগ সুদের উপর গড়ে তুলেছো। এর ফলশ্রুতিতেই ইহুদিরা তাদের বিভিন্ন রূপ ও ছদ্মবেশে তোমাদের অর্থনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছে। এগুলোর মাধ্যমেই তারা তোমাদের মিডিয়া, এমনকি জীবনের সমস্ত দিকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তোমাদেরকে তাঁদের দাস বানিয়ে ফেলেছে। তোমাদের ব্যায়ে নিজেদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করছে তারা। ঠিক যেমনটি বেঞ্জামিন ফ্র্যাঙ্কলিন সতর্ক করেছিলেন।
(iii) তোমরা এমন এক জাতি যারা মাদকদ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবসা এবং ব্যবহারের অনুমতি দেয়। তোমরা মাদকের অনুমতি দাও কিন্তু সেটার ব্যবসা নিষিদ্ধ করো। অথচ তোমাদের জাতিই মাদকের সবচেয়ে বড় ভোক্তা।
(iv) তোমরা এমন এক জাতি যারা মানুষকে সমস্ত অনৈতিক কাজের অনুমতি দেয় আর সেটাকে তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতার স্তম্ভ বলে মনে করে। তোমরা ধীরে ধীরে এমন অটল গহবরে তলিয়ে যেতে চলেছো যতক্ষন না পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে অজাচার ছড়িয়ে পড়ছে। সেসময়ে তোমাদের সম্মানবোধ কিংবা আইন কোনটাই এর আপত্তি করবে না।
হোয়াইট হাউজের ওভাল অফিসে তোমাদের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টনের অনৈতিক কার্যকলাপ কে ভুলতে পারে? তোমরা তার বিচার পর্যন্ত করোনি, শুধুমাত্র “তিনি ভুল করেছেন” বলা ছাড়া। কোন শাস্তি ছাড়াই সে পার পেয়ে গিয়েছে। ইতিহাসে তোমাদের লজ্জাভরে স্মরণ করার জন্যে এর চাইতে ন্যাক্কারজনক আর কোন ঘটনা কি আছে?
(v) তোমরা এমন এক জাতি যারা সব ধরনের জুয়া খেলার অনুমতি দেয়। কোম্পানিগুলিও এতে জড়িত। যার ফলে বিনিয়োগ সক্রিয় হয়ে ওঠে, অপরাধীরা ধনী হয়।
(vi) তোমরা এমন জাতি যারা নারীদের ভোগ্য পন্য আর বিজ্ঞাপন সরঞ্জামের মতো ব্যবহার করো যারা মানুষদের এটা ওটা কিনতে আহ্বান জানায়। শুধুমাত্র প্রফিট মার্জিন বাড়াবার লক্ষ্যে যাত্রী, দর্শনার্থী, এমনকি অপরিচিতদের সেবা করতে তোমরা নারীদের ব্যবহার করো। আবার নারীমুক্তির সমর্থনে তোমরাই আবার চিৎকার চেঁচামেচি করে বেড়াও।
(vii) তোমাদের জাতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সব ধরনের যৌন ব্যবসা করে। শিল্প, বিনোদন, পর্যটন এবং স্বাধীনতা এবং অন্যান্য প্রতারণামূলক শব্দ একে নামকরণ করো।
(viii) আর এসবের কারণেই ইতিহাস তোমাদের এমন এক জাতি হিসেবে বর্ণনা করেছে যারা কিনা মানুষের মাঝে এমন অজানা রোগ ছড়ায় যা অতীতে কেউ চিনতো না। যাও মানবতার সামনে গর্ব করে প্রচার করো তো যে তোমরাই পৃথিবীতে এইডস নামক রোগ উৎপাদন করেছো। এক শয়তানী আমেরিকান আবিস্কার!
(xi) তোমরাই তোমাদের শিল্প বর্জ্য আর গ্যাস দিয়ে ইতিহাসের অন্য যেকোনো জাতির চাইতে অনেক বেশি পরিমাণে প্রকৃতিকে ধ্বংস করেছো। এরপরেও তোমরা Kyoto চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করছো, যাতে তোমাদের লোভী কোম্পানি আর শিল্পগুলির মুনাফা সুরক্ষিত থাকে।
(x) তোমাদের আইন হল ধনীদের আইন। তারা তাদের রাজনৈতিক দলগুলির ওপর আধিপত্য কায়েম করে। তারাই বিভিন্ন “উপহারের” মাধ্যমে সেসব রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারণা। এদের পেছনে কলকাঠি নাড়ছে ইহুদিরা। এরাই তোমাদের পলিসি, তোমাদের মিডিয়া আর তোমাদের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে।
(xi) যেই একটি কারণে পুরো বিশ্বমানবতার ইতিহাসে তোমরা অনন্য হয়ে থাকবে তা হলো, তোমরা অন্য যেকোনো জাতির তুলনায় সবচাইতে বেশী মানুষ হত্যা করেছো। কোন নীতি বা মুল্যবোধ রক্ষার জন্যে নয়, শুধুমাত্র নিজেদের লাভ আর স্বার্থ রক্ষার জন্যে। তোমরাই জাপানে (হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে) নিউক্লিয়ার বোমা ফেলেছিলে। যদিও জাপান তখন তোমাদের সাথে যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত হয়েই ছিল। হে (তথাকথিত) স্বাধীনতার ঝান্ডাধারীরা! কি পরিমাণ অত্যাচার, অবিচার, নৃশংসতা তোমরা করেছো?!
(xii) তোমাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য যেন ভুলে না যাই আবার; আচরণ আর মুল্যবোধে তোমাদের দ্বীচারিতা ও নীতি ও শিষ্টাচারে তোমাদের ভন্ডামি।
(গ) সমস্ত প্রকার নীতি, শিষ্টাচার আর মুল্যবোধে তোমরা দুটো পরিমাপক (স্ট্যান্ডার্ড) বানিয়ে রেখেছো; একটা নিজেদের জন্য, আরেকটা অন্যদের জন্যে।
(i) যেই স্বাধীনতা আর গণতন্ত্রের ডাক তোমরা দিয়েছো তা শুধু তোমাদের নিজেদের ও সাদা জাতিদের জন্যেই। বাকি পুরো পৃথিবীর জন্যে তোমরা দানবসদৃশ ধ্বংসাত্নক নীতি আর সরকারদের চাপিয়ে দিয়েছো। এদের তোমরা “আমেরিকার বন্ধু” বলে ডাকো। এরপরেও তোমরা তাদের দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বাঁধা দাও। আলজেরিয়ার ইসলামিক পার্টি যখন সেখানে গণতন্ত্র চর্চা করে নির্বাচনে জিতে গেলো, তখন তোমরা তোমাদের এজেন্টদের আলজেরিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে ছেড়ে দিলে যেন তাদের তারা ট্যাংক আর বন্দুক দিয়ে আক্রমণ করে, বন্দী করে, অত্যাচার করে। “আমেরিকান গণতন্ত্রের বই”-এর এক নতুন শিক্ষা।
(ii) বিশ্ব শান্তি নিশ্চিত করার বাহানায় গণবিধ্বংসী অস্ত্রগুলিকে নিষিদ্ধ এবং জোরপূর্বক অপসারণের বিষয়ে তোমাদের নীতি শুধুমাত্র সেসব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য যেগুলোকে তোমরা এসব অস্ত্র রাখতে অনুমতি দাও না। আর যে দেশগুলোর ব্যাপারে সম্মত হও—যেমন ইসরায়েল—তাদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য এই ধরনের অস্ত্র রাখার এবং ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়। অন্য কোন দেশের ব্যাপারে এরকম অস্ত্র তৈরি করছে বা রাখছে সন্দেহ করা মাত্রই তাদের অপরাধী তকমা লাগিয়ে দাও, তাদের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করো।
(iii) আন্তর্জাতিক আইন মানা আর সম্মানের ব্যাপারে তোমরাই সবচাইতে পিছিয়ে। অন্যদিকে অন্য কেউ এমন কাজ করলে (নিজের ইচ্ছেমতো) বেছে বেছে তাঁদের শাস্তি দাও। অথচ ইসরায়েল ৫০ বছরেরও বেশী সময় যাবত জাতিসংঘের আইনগুলোকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আসছে, তোমাদের আমেরিকার পূর্ণ সমর্থনেই।
(iv) আর যে যুদ্ধাপরাধীদের নিন্দার জন্যে তোমরা ফৈজদারি আদালত গঠন করেছো, সেই আদালতেই তোমরা নির্লজ্জের মতো নিজেদের ব্যাপারে immunity চাও! ইতিহাস কিন্তু ভুলবে না কি ধরণের যুদ্ধাপরাধ তোমরা মুসলিমসহ পুরো বিশ্বের ওপর করেছো। জাপান, আফগানিস্তান, সোমালিয়া, লেবানন, ইরাকে তোমাদের হত্যাযজ্ঞ চিরকাল তোমাদের এমন অপমান করতে থাকবে যা থেকে কোন নিস্তার পাবে না।
সাম্প্রতিককালে আফগানিস্তানের ঘটনাই তোমাদের যুদ্ধাপরাধ মনে করিয়ে দেবার জন্যে যথেষ্ট। তোমরা ঘনবসতিপূর্ণ গ্রাম ধ্বংস করেছো, তোমাদের বোমাবর্ষণে মসজিদে নামাযরত মুসল্লিদের মাথায় ছাদ ভেঙ্গে পড়েছিল। কুন্দুয ত্যাগ করবার সময় তোমরাই মুজাহিদীনদের সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করে জঙ্গি দূর্গে তাদের উপর বোমা ফেলেছিলে। এক হাজারেরও বেশী বন্দীদের শ্বাসরোধ ও তৃষ্ণায় হত্যা করেছিলে তোমরাই। এছাড়াও তোমাদের ও তোমাদের এজেন্টের অত্যাচারে আরও না জানি কতো মানুষ মারা গেছে তা শুধু আল্লাহ তা’আলাই জানেন। তোমাদের প্লেন এখনো আফগানের আকাশে আছে, দূর থেকে এখনো সন্দেহজনক মানুষ খুঁজে বেড়াচ্ছে।
(v) তোমরা নিজেদের মানবাধিকারের ঝান্ডাধারী হিসেবে দাবী করো। তোমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় মানবাধিকার লঙ্ঘন করে এমন দেশের বাৎসরিক পরিসংখান প্রকাশ করে। অথচ মুজাহিদীনরা যখন আক্রমণ করলো তখন সব মানবাধিকার উধাও হয়ে গেলো। যেসব সরকারের পদ্ধতিগুলো নথিভুক্ত করে তাদের নিন্দা জানাতে তাদের কাজকর্মই শুরু করে দিলে! খোদ আমেরিকাতেই তোমরা হাজার হাজার মুসলিম ও আরবদের ধরে নিয়ে গিয়েছো। কোন কারণ, আদালতে বিচার বা নাম প্রকাশ করা ছাড়াই তাদের তুলে নিয়ে গেছো। নতুন আরও কঠোর আইনও জারি করেছো।
গুয়ান্তানামোতে যা ঘটেছে তা তো আমেরিকা ও তার মুল্যবোধের মুখে এক ঐতিহাসিক কলঙ্ক, যা চিৎকার করে বলছে, “হে ভণ্ড! যে কোন চুক্তিতে তোমাদের স্বাক্ষরের (বিন্দুমাত্র) মূল্য (আছে) কি?”
(৩) আমরা তোমাদের আর যে বিষয়ের দিকে আহ্বান করি তা হল, নিজেদের সাথে সৎ থাকো।
যদিও তোমরা আদৌ তা করবে কিনা সন্দেহ আছে! নিজেদের সাথে সৎ হলে তোমরা আবিষ্কার করবে যে তোমরা এমন এক জাতি যার কোন প্রকার মূল্যবোধ বা শিষ্টাচার নেই। যেসব মূল্যবোধ ও নীতি-নৈতিকতার বুলি তোমরা ছড়াও তা শুধু অন্যের কাছেই দাবী করো, নিজেদের কাছে নয়।
(৪) আমরা আরও আহ্বান করছি, ইসরায়েলকে সমর্থন করা বন্ধ করো।
কাশ্মীরের বিরুদ্ধে ভারতের, চেচেনদের বিরুদ্ধে রাশিয়ানদের ও দক্ষিণ ফিলিপাইনের মুসলমানদের বিরুদ্ধে ম্যানিলা সরকারকে সমর্থন করা বন্ধ করতেও আহ্বান জানাচ্ছি।
(৫) তোমাদের আরও বলছি, তল্পিতল্পা গুছিয়ে আমাদের ভূমি থেকে বের হয়ে যাও।
আমরা তোমাদের ভালোই চাই। তোমাদের হেদায়েত আর ধার্মিকতাও কামনা করি। অতএব, তোমাদের কফিনের মালামাল হিসেবে ফেরত পাঠাতে আমাদের বাধ্য করো না।
(৬) আমাদের দেশেগুলোর দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের প্রতি সমর্থন বন্ধ করারও আহ্বান জানাচ্ছি।
আমাদের রাজনীতি ও শিক্ষা পদ্ধতিতে হস্তক্ষেপ করবে না। আমাদের একা ছেড়ে দাও। অন্যথায় নিউইয়র্ক এবং ওয়াশিংটনে আমাদের দেখতে পাবে।
(৭) দমনপীড়ন, চুরি আর দখলদারিত্ব নয়, বরং আমাদের সাথে পারস্পরিক স্বার্থ এবং সুবিধার ভিত্তিতে সম্পর্ক ও লেনদেন করতে আহ্বান জানাচ্ছি।
ইহুদিদের সমর্থন করার নীতিটিও বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। নইলে তা তোমাদের আরও বিপর্যয় ঘটাবে।
তোমরা যদি এই সমস্ত শর্তে সাড়া দিতে ব্যর্থ হও তবে ইসলামী জাতির সাথে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও।
তাওহীদবাদী এই জাতি আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখে এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় করে না। এই জাতিকে কুরআনে এভাবে সম্বোধন করা হয়েছে:
“তোমরা কি তাদেরকে ভয় কর? আল্লাহ্কে ভয় করাই তোমাদের পক্ষে বেশী সমীচীন যদি তোমরা মুমিন হও। তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। তোমাদের হাতে আল্লাহ্ তাদেরকে শাস্তি দেবেন, তাদেরকে অপদস্ত করবেন, তাদের উপর তোমাদেরকে বিজয়ী করেবেন এবং মুমিন সম্প্রদায়ের চিত্ত প্রশান্তি করবেন। আর তিনি তাদের অন্তরের ক্ষোভ দূর করবেন এবং আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা তার তাওবা কবুল করবেন। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” [কুরআন ৯:১৩-১৫]
সম্মান ও শ্রদ্ধার জাতি:
"শক্তি-সম্মান তো আল্লাহরই, আর তাঁর রাসূল ও মুমিনদের।" [কুরআন 63:8]
“তোমরা হীনবল হয়ো না এবং চিন্তিত ও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও।” [কুরআন 3:139]
শাহাদাতের জাতি — তোমরা জীবন যতো আশা করো তার চাইতে বেশী তারা মৃত্যু আশা করে
“আর যারা আল্লাহ্র পথে নিহত হয়েছে তাদেরকে কখনোই মৃত মনে করো না; বরং তারা জীবিত এবং তাদের রবের কাছ থেকে তারা রিযকপ্রাপ্ত। আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে তারা আনন্দিত এবং তাদের পিছনে যারা এখনো তাদের সাথে মিলিত হয়নি তাদের জন্য আনন্দ প্রকাশ করে যে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না। তারা আনন্দ প্রকাশ করে আল্লাহ্র নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্য এবং এজন্য যে আল্লাহ মুমিনদের শ্রমফল নষ্ট করেন না।” [কুরআন 3:169-171]
বিজয় ও সাফল্যের জাতি — যা আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন
"তিনিই তাঁর রাসূলকে প্রেরণ করেছেন হেদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ সকল দ্বীনের উপর তাকে বিজয়ী করার জন্য, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।" [কুরআন 61:9]
“আল্লাহ্ লিখে রেখেছেন, ‘আমি অবশ্যই বিজয়ী হব এবং আমার রাসূলগণও’। নিশ্চয় আল্লাহ্ মহাশক্তিমান, মহাপরাক্রমশালী।" [কুরআন 58:21]
যে ইসলামি জাতি তোমাদের মতো পুর্ববর্তী মন্দ সাম্রাজ্য ধ্বংস করে এসেছে, যে জাতি তোমাদের আক্রমণ প্রত্যাখ্যান করে, তোমাদের মন্দ দূর করতে চায়, সেই জাতি তোমাদের সাথে লড়াই করতে সদাপ্রস্তুত। তোমরা খুব ভালো করেই জানো, এই ইসলামি জাতি তাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে তোমাদের অহংকারকে কতোটা ঘৃণা করে।
আমেরিকানরা যদি আমাদের এসব পরামর্শ, কল্যাণ, নির্দেশনা ও যেই ন্যায়পরায়নতার দিকে আহ্বান জানাচ্ছি তা শুনতে অস্বীকার করে, তবে জেনে রাখো, যেই ক্রুসেড বুশ শুরু করেছে তাতে তোমরা হেরে যাবেই। ঠিক যেভাবে পুর্ববর্তী ক্রুসেডগুলোতে তোমরা মুজাহিদীনদের হাতে অপমানিত হয়ে লজ্জা ও নীরবতার সাথে ঘরে পালিয়ে গিয়েছিলে। আমেরিকানরা যদি সাড়া না দেয় তবে তাদের পরিণতি হবে ঠিক সেই সোভিয়েতদের মতোই যারা সামরিক পরাজয়, রাজনৈতিক ভাঙ্গন, আদর্শিক পতন এবং অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্ব সামাল দেবার জন্য আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।
এইটা কহু খুজেছি পাই নাই।। আজকে আবার পাইলাম।।
এটা তো অন্য টা মনে হয়!